দুনিয়ার ন্যাশনাল এন্থেম—যেসব স্টেট কি না স্টেট হিসেবে কনসাসলি তৈরি হইছে—না হওয়ারও অপশন ছিল—বাই চয়েস ফেডারেশন—উইন উইন চুক্তিতে—ওদের এন্থেম গ্রেটার কজ খোঁজে—ইউএসেরটা দেখবেন ক্রুসেডের একটা ভাইভ আছে—শিশ্নের মত দণ্ডায়মান পতাকা।
ইউকের ন্যাশনাল এন্থেম নিয়া যদিও দুনিয়ায় ন্যাশনাল এন্থেমের প্রতি কেউ সিরিয়াস হইত—তাহলে এই রাজা রানীর বন্দনারে মধ্যযুগীয় বর্বরতা বলতো—আবার অ্যারোগেন্সিও দেখতে পাইতেন বটে, যে ঔপনেবেশিক শাসনের যে সিম্বল তারে তারা এখনও উৎযাপন করে। কিন্তু বৃটিশরা বুদ্ধিমান রকমের অলস তো—এই কারেক্ট হওয়ার জন্য চেঞ্জ করতে যায় নাই, ন্যাচারাল স্টেট বইলা।
কিন্তু ওরা রাজা-রানীরে আবার একসাথে গায় না, কিন্তু রানী বন্দনায় মনে হয় ভার্জিন মেরীর ইমেজারি রইছে।
জার্মান ফাদারল্যান্ডেরটা শার্প আর ওকে, ইসরাইলেরটা স্লোগান টাইপ—সোভিয়েতেরটা অতিমাত্রায় জার্নালিজম।
মানে ঠিক কিছু যায় আসে কি? আসে কিন্তু মাঝে মাঝে, যায়ও। ধরেন আমার জিলা স্কুলের থ্রীতে ঘুম ভাইঙ্গা আইসা এত ভিড়ের মাঝে দাঁড়ায় ভয় করত—এই স্রোতের ভেতর আলাদা হয়ে পড়ার ভয়।
আমি তখন কেবল আবিষ্কার করতে শিখছি—আমার হাঁটা চলায় কেমন জানি সমস্যা রইছে—কলমের কালি হাতে লাগত, না খেললেও প্যান্টে ধুলা লাগত, একটু এদিক ওদিক হইলেই চার পাঁচটা বইয়ের মধ্যে ঠিক বইটা বাইর না করতে পারার সম্ভাবনা থাকত।
আমার তখন কান্না ছোট দমের ফোঁপানি ছিল—কিন্তু আমি সোজা লাইনগুলায় গলা ফাটায় গাইতাম, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে লাইনটায় আমার সুর-তালহীন গলা কাঁপত। কান্নাটা টের পাইতাম। ভয় ভয় উত্তেজক কান্না। এইটা মনে হয় মিশে টিশে যায় সকালের অভ্যাসের সাথে, আমি ফাইভে ওঠার পর যখন কিনা স্কুলে আমারে প্রতিদিন বাধ্যতামূলক গাইতে হইত তখন চেঞ্জের কথা আসলে আমি চেইতা যাইতাম নিশ্চিত— ‘৭২ সালেও স্কুলে দাঁড়ায় কোনো বাচ্চা যদি নতুন এই চেঞ্জের ব্যাপারে একটু বিরক্ত হইছিল তারে আবার সবচেয়ে কম বয়সী রাজাকার বইলেন না।
যেমন ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধরে যুদ্ধ না বইলা গণ্ডগোল বলাটা যে যুদ্ধের স্কেলরে ছোট না করা সেটা বোঝার ব্যাপারও আছে—পশ্চিম পাকিস্তান যে বাংলাদেশের উপর যুদ্ধ চাপায় দিছে—সেইটা বইলাই আমরা শপথ নিছিলাম তখন। সুতরাং গণ্ডগোল বলার যে সরলতা আছে তারে জটিল কইরেন না।
আমার একটা এমন কোরাসের সাথে কৈশোরের স্বাস্থ্যকর লোনলিনেস আর গলা খুলে কান্নার গান হইতেছে ইয়া নবী সালামালাইকা—নবীজীর উসিলা দিয়া—কান্দিলেন আদমও হাওয়া এই সহজ সুরের কোরাসে আমি ক্লাস সেভেনে টার্মে কোনো না কোনো কারণে এক দুইবার কান্দছি। হালকা লাগছিল।
জাতীয় সঙ্গীতরে বলা যায় ইন্সটিটিউশনালাইজ করার উইপন—কম বয়সে। ভালো না খারাপ সেটা জাজ করা কঠিন—কিন্তু মিশে যায়।
ন্যাশনাল এন্থেমরে যদি ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে শানে নুযূল সমেত শুদ্ধ হইতে হয় তাইলে তো এরে বেশি গুরুত্ব দিতেছেন।
সোনার বাংলারে যদি মনে হয় চেঞ্জ করতে চান তাইলে পুরাতন গান টান না নিয়া নতুন কইরা আহ্বান করতে পারেন।
ফরহাদ মজহার লিখবেন না—উনার গান এবং সুরের ব্যাপারটা অন্য ধাঁচের—উনি মনে হয় প্রয়োজনের বসে সহজিয়া হইতে পারবেন না। আর রাষ্ট্রের চরিত্র নিয়া জানেন বলেই হয়তো—উনার কিছু শাসকের দম্ভ হবে কোনো এক সময় ঐ ঝামেলায় যাবেন কিনা, আবার এখানে সবার চাহিদা দেখে বুঝলাম সবাই একটা গা গরমের গান চায়—অহংবোধ চায়। কামু ভাই মনে হয় না লিখবেন। হৃদয়ের দাবি রাখো পোলাপাইন গাইতে গেলে ঘুম থেকে ওঠার অভিমানে কানতে পারবে না ইন বিটউইন।
যেই চেঞ্জের খরচ তার আউটকামের চেয়ে বেশি সেটা চেঞ্জ না করাটা অধিকতর বিপ্লব—কারণ গোয়ার্তুমি বিপ্লবী হওয়ার আগ পর্যন্ত জরুরী—বিপ্লবী হইলেন যখন কিনা গোঁয়ার্তুমিরে আপনি আক্কেল দিয়া চেক দিতে শেখেন। বিপ্লবীর এমন বৃথা সময় কই রেজিমেন্টেড স্টেট মেকানিজমের মত?
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ঐতিহাসিক কারণেই এমন ন্যাচারাল যে এটায় ইনভেস্টমেন্ট দরকার নাই।
বাংলা গান বেশি কথানির্ভর এইটা দিয়া ওমন করাটা না কঠিন আসলে। আর ধরেন একটা স্বাধীন দাবি করা দেশের জনগণ কারার ঐ লৌহ-কবাট কিংবা শেকল পরার ছলরে গাইবে আর সেটা শাসক, রাষ্ট্র মানবে তা হয় ?
আচ্ছা ২০২৪ এর জুলাইরে যদি গণ্ডগোলের মাস বইলা ডাকে কেউ—আপনাদের কি মনে হবে এতে আপনার আন্দোলনরে ইচ্ছাকৃত ছোট করতেছেন কেউ?
আচ্ছা ‘৭১ এ রবীন্দ্রনাথরে আমরা নিছিলাম কেননা আইয়ুব এই রবীন্দ্রনাথরে নিয়া আন্দাজে চ্যাতাইছেন।
তো জুলুমের অপছন্দরে চুজ করাটা ভালো প্রতিক্রিয়া। আওয়ামী লীগের গা জ্বালায় দেয়া এমন কেউ আছেন যার গান নিষিদ্ধ করতে চাইছিল লীগ?
ধরেন বাংলাদেশের জাতীয় পশু বাঘ চেঞ্জ কইরা সেফুদার জার্মান শেফার্ড করার ইচ্ছা দমন করতে হবে কেননা সেটা শেখ হাসিনা বেগম জিয়ারে নিয়া প্রকাশ্য যেমন সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন সেরকমই রুচিহীন—রাষ্ট্ররে এমন ডার্ক কমেডিতে নিতে মাঝে মাঝে আমার ইচ্ছা হয়, কেননা হাসিনার পদে থাইকা এমন কিছু বলা আর সেফুদার তেমন বলা দুইটায় পার্থক্য করতে পারেন—কিন্তু আমি তো গঠনমূলক না, কিন্তু রাষ্ট্ররে তা হইতে হয়। কমপক্ষে হওয়ার ভান তো ধরতেই হয়, আপনারা তো বিসিএস দিয়াই চাকরি চান, ভালো ইউনাভার্সিটির ল ইকোনমিক্স পড়া লোকজন চান—ইকোনমিস্টরে কমিউনিস্ট শুইনা হাত তুইলা কিউবার অর্থমন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাওয়া চে—যে বিপ্লবী ব্যবস্থায় ভালো অর্থমন্ত্রী হইতেও পারেন এই জোশটা তো ছিল তেমন সশস্ত্র বিপ্লবে, আমাদের নাই—আমরা ভালো সিভি চাই—যেটা ভালোই।
এইটাই ঝামেলা র্যাডিকেল না হইয়া—স্ট্যাবিলিটিরে রাইখা রাষ্ট্রের টোকেন পুনঃনির্মান করার, আপনারে কনসাস থাকতে হয়।