পুলিশ যে মাঝে মাঝে বিপুল জেহাদি বই নিয়া আটক করত লোকজনকে সেটা আমারে চিন্তিত করত। আমি এইরকম জেহাদি বই খুঁজতে যাইয়া জ্বীন জাতির আশ্চর্য ইতিহাস নামের একটা বই পাইছিলাম।
মুসলিম যোদ্ধাদের নৃশংসতা আর আক্কেলবুদ্ধি কম এটার প্রমাণ হিসেবে এই লাইব্রেরী আর বই পোড়ানোর ঘটনা প্রচারিত হয়, ব্যবহার হয় বেশি। অবশ্য ম্যাচ কিংবা লাইটার ছাড়া আমি কোন বইরে আগ্নেয় হইতে দেখি নাই। হয়তো আমার অন্তর তালাবদ্ধ বইলাই।

সংগৃহীত
হিজবুত তাহেরীরের পোস্টার দেইখা বুঝতে পারছি, জেন জি জেনারেশনের মত এইসব সো কল্ড জিহাদি বইয়ের নিজেদের কিছু শব্দ আছে। যেমন কর্পোরেট লোকজনের পজেটিভ থিংকিং, গুড লিসেনার টাইপ জিনিস আছে তেমনি। সর্বহারা রাজনীতির বইগুলাও এমন শব্দ ভারাক্রান্ত। এখন ঐ শব্দে আমি যদি ঠিক না ট্রিগার্ড হই তাইলে সমস্যা আমারই। বই হয়তো আসলেই নিজে জ্বলে এবং যারে ইচ্ছা তারে জ্বলতে সাহায্য কইরা থাকতে পারে। আমি মোটেই দাহ্য গ্রাহ্য হই নাই গ্রন্থসমূহের কাছে।
বই যে আমারে একদম প্রতারিত করছে তা না, উপরে চকমকা কাভার আর ভেতরে নিউজপ্রিন্ট, রসময় গুপ্ত- আমারে এক প্রলম্বিত শিখা অনুভব করাইছিল, মোমের সলতে যেন মশাল মত দগ্ধ করছিল আমারে। এইরকম প্রলম্বিত ইরেকশন যে কী জঘন্য যন্ত্রণার- কৈশোরে ওটা টের পাইছিলাম।
তবে সমরেশ মজুমদারের কোন জানি একটা বিল্পব বিপ্লব পিকনিকের একটা বই পইড়া অনেকরে উত্তেজিত হইতে দেখছিলাম, দুই ছেলে আর এক মেয়ে থাকে- আদিবাসী পল্লীতে যায় মনে হয়। আমি বইটা উল্টায় পালটায় দেখছিলাম। তিন কুঠরী নয় দরজা কি ? হইতে পারে।
এখন যাইহোক এই বই পোড়ানোর ঘটনায় আমি সচেতন বিরোধীতা করতে পারি না- সেটা মুসলিমদের অসভ্যতার টুলস হিসেবে ব্যবহার করা হইছে বইলা।মানে বর্বরতার চিহ্ন হইতেছে বই পোড়ান- এইটা আমি মানি না।
১৪ সালে মনে হয় আমি একটু উপহাস কইরা স্ট্যাটাস দিছিলাম- যে টাকায় বঙ্গবন্ধুর ছবি নাই আমি সেই টাকা নেব না- আপনি নোট চেঞ্জ কইরা দেন। আমি আসলেই দোকানদাররে বলছিলামও সত্যি সত্যি।
আবার বইরে প্রতীক হিসাবে যদি পোড়ান হয়, তাইলে আবার সেই টোকেনের সিম্বলিজমের ন্যারেটিভরে মাইনা নেয়া হয়। মানে ইতিহাস বিকৃতিও ইতিহাসের অংশ, আবার তারে শুদ্ধ করতে সেই টেক্সট পোড়ান, আবার সেটারে পোড়ান হইছে বইলা হাহাকার এ এক কন্টিনিউয়াস জিনিস- এটায় আমি কানেক্টেড হইতে পারি না।
রাজ্জাক একবার চাকরি না পাইয়া সিনেমায় ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়ার সার্টিফিকেট মনে হয় টুকরা করছিল- আমি শঙ্কিত হইছিলাম ঐ সিনে। বয়স কম হওয়ায়।পতাকা , সংবিধান দাহ্য যা কিছু আছে মানুষ অগ্নিকান্ডের ব্যাপারে সাবধান থাইকা পুড়াইতেই পারে। তবে এমন না যে লেখকের বাড়িতে কিংবা দোকান থিকা বিক্রি হবার আগে তা পোড়াবেন- বই বিজনেসের জন্য এটা ভালো না। লেখকদের খারাপ লেখার জন্যও বইয়ে নির্ধারিত যে মূল্য লেখা সেটা পরিশোধ কইরা পোড়াবেন।
হেফাজত ঢাকায় আইসা কোরআন শরীফ পুড়াইছিল এই গল্প দেয়ার পর অনেকরে ডরায় যাইতে দেখছিলাম। সুতরাং বই পোড়ানোর রাজনীতি সেই স্মৃতিও জাগাইতে পারে। কিন্তু তাতে কী।
গুটেনবার্গের ছাপাখানা আসার আগেও, যে কথামালা বারবার নিজেকে কিতাব কিংবা গ্রন্থ হিসেবে নিজেরে ঘোষণা করছে- যা কি না লাওয়ে মাহফুজে সংরক্ষিত, সেটায় হাত রাইখা শপথ নেয়ারেও আমার আজকাল কেন জানি বস্তু-উপাসনার কাছাকাছি মনে হয়। কিন্তু ধরেন যার কোরআনের আয়াত লেখা পৃষ্ঠার প্রতি ভালবাসা রইছে- তাঁর আহত হওয়ারে আমি অনুভব করতে পারি না যেহেতু তাই নাকচ করতেও পারি না।
এখন দেখেন আমি একই লেখায় আমার পর্নোগ্রাফিতে আপ্লুত হওয়ার এবং ঐশী গ্রন্থের আলোচনা করার কমন জায়গা কিন্তু ঐ কাগজে লিপিবদ্ধতার কারণেই।
যে বই পোড়ান হয়- সে আগ্রহ জাগায়।
Nice writing. Wish to get more. Use of colloquial sounds well in mind. You are in evolution and will get better and better in future. In sha Allah